রিমান্ড নামঞ্জুর....

চকরিয়ায় মা-মেয়েকে নিযার্তন মামলার তিন আসামীকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

এ কে এম ইকবাল ফারুক, চকরিয়া ◑

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গরু চুরির অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েসহ একই পরিবারের চার সদস্যকে রশিদিয়ে বেঁধে নিযার্তনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন আসামীর রিমান্ড আবেদন নামমঞ্জুর করেছেন চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামীদের পঁাচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তা নামমঞ্জুর করে যে কোনদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার নির্দেশ দেন।

এদিকে আলোচিত মা-মেয়ে নিযার্তন মামলার প্রধান আসামী হারবাং ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। ইতোমধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকবার অভিযান চালালেও ইউপি চেয়ারম্যান গা ঢাকা দেওয়ায় তাতে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তবে এলাকাবাসীর দাবী, ইউপি চেয়ারম্যান মিরান বর্তমানে হারবাং এলাকাতেই অবস্থান করছেন। দিনদুপুরে তিনি প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও রহস্যজনকভাবে পুলিশ তাকে ধরছে না। ইউপি চেয়ারম্যান মিরান ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়া তাকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অনিহা রয়েছে বলেও জানান তারা।

মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট ইলিয়াছ আরিফ বলেন, গরুচুরির মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় গত ২৫ আগষ্ট নির্যাতনের শিকার পারভীন আক্তার বাদি চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামী জসিম উদ্দিন, নাছির উদ্দিন ও নজরুল ইসলাম বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। কিন্তু ওই মামলার প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান মিরান এখনো অধরা রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) কারাগারে থাকা তিন আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও হারবাং পুলিশ ফঁাড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম আসামীদের পঁাচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আদালত ওই রিমান্ড আবেদন নামমঞ্জুর করে আসামীদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।

মা-মেয়েকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গত ২৪ আগষ্ট রাতে হারবাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের লালব্রীজ এলাকার নাছির উদ্দিন, জসিম উদ্দিন ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাদের ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। এর পরদিন ২৫ আগষ্ট নির্যাতনের শিকার পারভীন আক্তার বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মিরানুল ইসলাম মিরানসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরো ২৫-৩০জন অজ্ঞাতনামা আসামী দেখিয়ে চকরিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২৪ আগষ্ট রাতে গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামীকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরআগে গত ২১ আগষ্ট কথিত গরুর মালিক মাহমুদুল হক বাদী হয়ে মা-মেয়েসহ পঁাচজনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি গরু চুরির মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া পারভীন আক্তারের ছেলে মো. এমরান ও সিএনজি চালক মো. ছুট্টু এখনো কারাগারে রয়েছেন। তবে আদালতের নির্দেশে নির্যাতনের শিকার মা ও দুই মেয়ে জামিনে রয়েছেন।